Dental Care
ফ্লোরাইড টুথপেস্টে ব্যবহার করা হয় দাঁতকে সুস্থ রাখার জন্য। এটি ক্যাভিটির সংক্রমণ না করেই মানুষের দাঁতের এনামেল ঠিকঠাক রেখে দাঁতের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করে। কিন্তু এই অত্যন্ত উপকারী ফ্লোরাইডও পরিণত হতে পারে বিষে অতিরিক্ত পরিমাণ ব্যবহারের কারণে?
আমরা সবাই-ই টুথপেস্ট দাঁত মাজতে ব্যবহার করে থাকি। আর টুথপেস্টে মজুদ থাকে ফ্লোরাইড।টুথপেস্টের ফ্লোরাইড কম পরিমাণে দাঁতের স্বাস্থ্য রক্ষায় ভালো হলেও এর অতিরিক্ত ব্যবহার মানুষের শরীরে বিষাক্ততার সৃষ্টি করতে পারে। অ্যামেরিকান অ্যাকাডেমি অব পেডিয়াট্রিক ডেন্টিস্ট্রি অনুসারে।
১৯৯৭ সাল থেকে আমেরিকার সব ফ্লোরাইডযুক্ত টুথপেস্টেই ফুড এন্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন বা এফডিএর নির্দেশানুযায়ী সতর্কতাবাণী লিখে দিতে বলা হয়েছে।
চিকিৎসকেরা মনে করেন ফ্লোরাইড টুথপেস্ট ব্যবহার করা উচিত না ২ বছরের কম বয়সী বাচ্চাদের।
অনেক সময় মনে হতে পারে যে একটুখানি টুথপেস্ট খেয়ে পেললে কিছু হবেনা। কিন্তু বাস্তবে এই সামান্য ফ্লোরাইড পেটে যাওয়ার মাধ্যমে বেশ কিছু সমস্যা হতে পারে আপনার কিংবা আপনার শিশুর। দাঁতের ওপর ছোপ ফেলে দিতে পারে ফ্লোরাইড। ফ্লোরাইড দাঁতে ছোট ছোট বাদামী চিহ্ন পাকাপাকিভাবে তৈরি করে। এ পরিণাম খারাপ হয়ে দাঁড়ায় টুথপেস্টের সাথে পানি কিংবা মাউথওয়াশ থেকেও ফ্লোরাইড গ্রহণ করা হয়।
প্রতিদিন একটু একটু করে ফ্লোরাইড গ্রহণ গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা সৃষ্টি করে। বাচ্চাদের ভেতরে তৈরি হয় অরুচি, বমিভাব আর ডায়রিয়ার সমস্যা। পরবর্তীতে বাচ্চাদের হাড়কেও দূর্বল করে গড়ে তুলতে পারে প্রতিদিন গ্রহণ করা এ ফ্লোরাইড এই একটু করে নেওয়া।
প্রথমদিকে দাঁত ক্ষয় হওয়ার কোনো লক্ষ্মণ প্রকাশ পায় নাহ। রোগীরা ও সাধারণত বুঝতে পারে নাহ। এর কারণ হচ্ছে আমাদের বাহ্যিক অংশে দুটো স্তর থাকে -এনামেল ও ডেন্টিন। বহুবিদ কারনে এনামেল ধীরে ধীরে ক্ষয় প্রাপ্ত হয়। এনামেল ক্ষয় হওয়ার সময় রোগীরা সাধারণত বুঝতে পারে নাহ। কিন্তু যখনই দাঁতের ক্ষয় এনামেল স্তর পেরিয়ে ডেন্টিন অংশকে আক্রান্ত করে তখনই লক্ষ্মণ প্রকাশ পায় ঠান্ডা বা গরম খাবার খেলে দাঁতে দাঁত শিরশির করা।
এতে আপনি বুঝতে পারবেন আপনার দাত ক্ষয় হচ্ছে কিনা।
দাঁতের এনামেল কোন কোন যৌগ দ্বারা তৈরি?
বেশিরভাগ অংশ ক্যালসিয়াম হাইড্রক্সি এপাটাইট। আরো কিছু প্রোটিন আছে যেমন এনামেলিন, টাফটেলিন ইত্যাদি। ফ্লুরাইড যুক্ত টুথপেস্ট ব্যবহার করলে তা এই যৌগের সাথে মিলে ক্যালসিয়াম ফ্লুরো এপাটাইট তৈরি করে যা দাঁতকে বাড়তি সুরক্ষা দেয়।
. প্রশ্ন : বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ১৭ থেকে ২১ বছর বয়সের মধ্যে আক্কেল দাঁত উঠে থাকে। কারো এই দাঁত আংশিকভাবে ওঠে, অনেকের মাড়ির নিচেই থেকে যায়। এই সমস্যা সম্পর্কে বলুন?
উত্তর : আক্কেল দাঁত ওঠার সঙ্গে সঙ্গে প্রচণ্ড ব্যথা দেখা দেয়। মাড়ি ফুলে যায়। এর ফলে শুধু মুখের ভেতরে ফোলাটা থাকে না, গালের দিকে ফুলে উঠতে দেখা যায়, তখন ভাবে, টনসিলের ব্যথা হয়েছে। আক্কেল দাঁতের জন্য যে গলা, মুখ ফুলে যেতে পারে, এ বিষয়ে আমাদের ধারণা কম। তাই রোগী দ্বিধায় পড়ে যায়। তবে আক্কেল দাঁতের জন্য এই সমস্যাগুলো প্রায়ই হয়ে থাকে।
- প্রশ্ন : আক্কেল দাঁতের বেলায় এমন হয় অন্যান্য দাঁতের বেলায় তো এ ধরনের সমস্যা হয় না কেন?
উত্তর : দুধের দাঁত পড়ার সঙ্গে সঙ্গে নিচ থেকে আরেকটি দাঁত উঠার জন্য জায়গা থাকে। আর আক্কেল দাঁতগুলো ১৮ বছরের পরে ওঠে। তখন আমাদের মাড়ির টিস্যু একটু পুরু ও শক্ত হয়ে থাকে। দাঁতটি উঠতে হলে তখন মাড়িকে একটু চিরে উঠতে হবে, ফলে ওঠার সময় চাপ হয় এবং মাড়িকে একটু কেটে কেটে সে বের হয়। সে জন্য এই ব্যথা থাকে।
অন্যান্য দাঁত সাধারণত সোজা হয়ে ওঠে আবার আক্কেল দাঁত অনেক সময় একটু বাঁকা হয়ে ওঠে। কিংবা আক্কেল দাঁত উঠতেই পারছে না, বাঁকা হয়ে আছে অথবা শুয়ে আছে অথবা পেছনের দিকে একটু কাত হয়ে আছে—এই সমস্যাগুলো দেখা দেয়। এ ধরনের অবস্থার জন্য, ব্যথা এবং ফোলার জন্য দাঁতটি উঠতে পারছে না।
- প্রশ্ন : এই যে দাঁত উঠতে না পারা, এর কারণ কী? এমনকি হতে পারে ১৮ বছরের পরে উঠছে, ফলে পর্যাপ্ত জায়গা কী দাঁতটি পাচ্ছে না?
উত্তর : অনেক সময় দেখা যায়, আক্কেল দাঁত যেহেতু শেষ দাঁত, তাই এর অবস্থার পরিবর্তন থাকে। আক্কেল দাঁতটি হচ্ছে সবচেয়ে শেষ দাঁত। চোয়ালটি একটি আকার ধারণ করে ফেলে, ফলে দাঁতটি পর্যাপ্ত জায়গা পায় না। আবার সে হয়তো সোজা না হয়ে, শুয়ে আছে। ফলে আর উঠতে পারছে না বা একটু কাত হয়ে সামনের দাঁতের সঙ্গে আটকে গেছে। সে কারণে জায়গা না পেয়ে তখন সমস্যা তৈরি হয়।
- প্রশ্ন : দাঁতের কোনো সমস্যা হলেই একসময় মানুষ ফেলে দিত। এখন দন্ত চিকিৎসকরা বলছেন, দাঁত ফেলে দেওয়া কোনো সমাধান নয়। উচিত হলো চিকিৎসা করে দাঁতকে রক্ষা করা। তাই মানুষ এই দিকে আগ্রহী হয়ে উঠেছে। আবার আক্কেল দাঁতের বেলায় কোনো সমস্যা হলে আপনারা ফেলে দিতে বলেন - এর কারণ কী?
উত্তর : আমাদের প্রধান যে খাবারের দাঁত, চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় যাকে মোলার টিথ বলা হয়, আক্কেল দাঁত সেই মোলার তিনটি দাঁতের মধ্যে একটি। এগুলো আমাদের খাবার চিবানোর কাজে ব্যবহার হয় না। সামনের যে মোলার টিথগুলো আছে, সেগুলোই আমাদের খাওয়ার কাজে ব্যবহার হয়। তবে শেষ যে দাঁত, আক্কেল দাঁত - সেটি খাওয়ার কাজে ব্যবহৃত হয় না।
Post a Comment
0 Comments